যুক্তরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থা ও আমলাতন্ত্রঃ আদি নকশা বনাম কেন্দ্রীকরণের সংস্কৃতি

14/02/2022
IiT English Page

২০২২-এর জানুয়ারী মাসে ভারত সরকার ইন্ডিয়ান অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস (আইএএস) ক্যাডার আইন, ১৯৫৪-এর সংশোধনের  প্রস্তাব করেছেন। এই সংশোধনের ফলে, কেন্দ্রসরকার তার নিজের প্রয়োজনে, রাজ্য বা সংশ্লিষ্ট আমলার সম্মতির বিষয়টি (বর্তমান আইন অনুযায়ী যা অত্যাবশ্যক) অগ্রাহ্য করে, একজন আইএএস আধিকারিকের কাজকর্ম নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন। এই সংশোধনী প্রস্তাবনাটি দ্রুত কেন্দ্র-রাজ্য লড়াইয়ের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে ওঠে। রাজ্যসরকারগুলির বক্তব্য অনুযায়ী, অল ইন্ডিয়া সার্ভিসেস (এআইএস)-এর নকশার অন্তর্নিহিত যুক্তরাষ্ট্রীয় আত্মাকে এই সংশোধন মূলত ধ্বংস করে। এর মধ্যে দিয়েই সক্রিয়ভাবে আমলাতন্ত্রের কেন্দ্রীকরণ হয়।   

ভারতের যুক্তরাষ্ট্রীয় চুক্তির গঠনের ক্ষেত্রে অভিজাত আমলাতন্ত্র, এবং বিশেষ করে আইএএস, ঠিক কতটা গুরুত্বপূর্ণ, ভারতের শাসনব্যবস্থার ক্রমবর্ধমান কেন্দ্রীভবনের পটভূমিতে কেন্দ্র-রাজ্য দ্বন্দ্বের এই সাম্প্রতিক কেন্দ্রবিন্দু আসলে তারই একটি গুরুত্বপূর্ণ ইঙ্গিত। আমলাতন্ত্র, তার নির্দিষ্ট নকশার কারণে, এর সংস্কৃতি এবং তার ফলে রাজনীতির সঙ্গে এর যে সম্পর্ক তৈরি হয় তার মধ্যে দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রীয় সম্পর্ক নির্ধারণ (ও অনেক সময়ই অবমূল্যায়ন) করার ক্ষেত্রে একটি অতিপ্রয়োজনীয় অস্ত্র হয়ে ওঠে। তা সত্ত্বেও, যুক্তরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থা নিয়ে আমাদের আলোচনায় এই আমলাতন্ত্র এবং রাজনৈতিক কেন্দ্রীভবন সংক্রান্ত বিষয়গুলি আনুষঙ্গিক প্রসঙ্গ হিসেবেই থেকে যায়। এখানে আমি এই সম্পর্কগুলির একটি প্রাথমিক ব্যাখ্যা উপস্থিত করব। আমার বক্তব্য, কেন্দ্রীভবনের সংস্কৃতির শিকড় আমলাতান্ত্রিক ক্ষমতার শ্রেণীবিন্যাসের অনেক গভীরে ঢুকে আছে এবং এই শ্রেণীবিন্যাস নিজেই আবার রাজনৈতিক কেন্দ্রীকরণে সাহায্য করে। ভারতের রাজনৈতিক কেন্দ্রীভবনের আকৃতি ও প্রকৃতি বোঝার জন্য এর প্রতি আমলাতন্ত্রের এই আকর্ষণকে বোঝা অত্যন্ত প্রয়োজন।    

যুক্তরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থার ব্যর্থ উচ্চাশা ও আদি নকশা
এআইএস, যার মধ্যে আইএএসের চাহিদা সবচেয়ে বেশি, এমনভাবে তৈরি হয়েছিল যাতে তা কেন্দ্র ও রাজ্যের মধ্যে যোগাযোগের পথ হিসেবে কাজ করতে পারে এবং সেই অর্থে, এআইএস সংবিধানের অন্তর্নিহিত যুক্তরাষ্ট্রীয় নকশার কেন্দ্রবিন্দু। নাম ও চরিত্র - দুই দিক থেকেই আইএএস “সর্বভারতীয়” । এই কারণে, কেন্দ্রের নিজস্ব ক্যাডার নেই। তার বদলে, কেন্দ্রকে আইএএস আধিকারিকদের একটা অংশের উপর নির্ভর করতে হয় যাঁদের রাজ্য থেকে নির্দিষ্ট সময়ের জন্য পাঠান হয়। কেন্দ্রে নীতি নির্ধারণ বিষয়ক সিদ্ধান্ত গ্রহণের সময় রাজ্যের অগ্রাধিকারের দাবী নিয়ে প্রতিনিধিত্ব করার পাশাপাশি বিভিন্ন জাতীয়স্তরের প্রশ্ন ও সমস্যায় রাজ্য প্রশাসনের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করাই এই পদক্ষেপের উদ্দেশ্য । ক্যাডারদের পরিচালনা (নিয়োগ ও বন্টন) কেন্দ্রসরকারের অধীনে হয়। এবং কর্মজীবনের একটা বড় অংশ জুড়ে একজন আইএএস আধিকারিক রাজ্যসরকারকে সেবা করবেন এবং ফলত, তাঁর কাজের জন্য তিনি ওই রাজ্যসরকারের কাছেই দায়বদ্ধ থাকবেন বলে আশা করা হয়। এইভাবে যুক্তরাষ্ট্রীয় ভারসাম্য রক্ষা করার কথা ভাবা হয়েছে। এই প্রস্তাবিত সংশোধন কেন্দ্রসরকারের হাতে রাজ্যের আইএএস আধিকারিকদের বদলি সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত ও সম্মতি অগ্রাহ্য করার ক্ষমতা তুলে দেয়, যার ফলে এই সূক্ষ্ম ভারসাম্য নষ্ট হয়ে যায়।  

রাজনৈতিক মান ও চলন এবং ক্যাডার পরিচালনার প্রাত্যহিক বাস্তবতা (জনস্বার্থ সংক্রান্ত কাজ, চাকরির “সর্বভারতীয়” চরিত্রের কারণে তৈরি হওয়া চাহিদা, এবং আধিকারিকদের ব্যক্তিগত জীবনের অবস্থা) নামে ও চরিত্রে  একজন “সর্বভারতীয় আইএএস” গড়ার যে আদি নকশা তা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। হয়ত এই আদি নকশাটির আসল প্রচেষ্টা ছিল অসংখ্য বিষয়ের মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখার, কিন্তু তার ফলে নানা সমস্যা দেখা দিয়েছে। যেমন, কেন্দ্রে ক্যাডারদের প্রতিনিধিত্বের দিক থেকে কিছু রাজ্য (হিমাচল প্রদেশ, বিহার, কেরালা এবং ভারতের উত্তরপূর্বের অংশ) সামঞ্জস্যহীন আনুকূল্য পায় এবং কেন্দ্রসরকারের স্তরে শূন্যপদের হার (বরাদ্দ পদের সংখ্যার সঙ্গে তুলনা করলে) সব সময়ই অনেক বেশি। তা বিশেষ করে দেখা যায় নিম্নতর পদগুলির ক্ষেত্রে (যুগ্ম সচিবের কাজে নিযুক্ত সহকারী সচিব)। এই মুহূর্তে ভারতে যখন রাজনৈতিক কেন্দ্রীভবন আরো তীব্রভাবে ঘটে চলেছে, তখন এই আদি নকশা যে দেশব্যাপী সমস্যার মুখোমুখি হয়েছে সেগুলি এই কেন্দ্রীকরণকে আরও গভীরে নিয়ে যাওয়ার জন্য সার্থক অস্ত্রে পরিণত হয়েছে। ভারত সরকারের অনেক গুরুত্বপূর্ণ পদই এখন গুজরাটের ক্যাডারের মধ্যে থেকে বাছাই করা উচ্চপদস্থ আধিকারিকদের অধিকারে। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী যখন গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন তখন থেকেই এঁরা তাঁর অনুগত। তার উপর, কেন্দ্রে লোকবলের টানা ঘাটতি এই প্রস্তাবিত সংশোধনের বৈধ সুযোগ করে দিয়েছে। এর সঙ্গে সঙ্গেই, এই লোকবলের ঘাটতি পূরণের জন্য এমন অনেক ক্যাডারকে তালিকাভুক্ত করা হয়েছিল যাঁরা আইএএস নন (অরণ্য ও রেলওয়ে) এবং বর্তমানে তাঁরা এমন সব পদে নিযুক্ত যা চিরকালই আইএএসদের অধিকারে ছিল। এই পরিবর্তনগুলির গুরুত্ব ও কার্যকারিতা নিয়ে ভিন্ন ভিন্ন মতামত দেখা যায়। এক দিকে, নীতিনির্ধারণের ক্ষেত্র থেকে আইএএসদের জন্য সুরক্ষিত দুর্গটি সরে গেলে একটি অতি প্রয়োজনীয় প্রতিযোগিতার আবহাওয়া তৈরি হতে পারে। অন্যদিকে, নীতিনির্ধারণের ক্ষেত্রে রাজ্যের প্রতিনিধিত্বকে গুরুত্ব দেওয়া কমিয়ে দিলে কেন্দ্রীভবন আরও দৃঢ়ভাবে সম্ভব হবে। রাজনৈতিক দিক থেকে দেখলে, এর থেকে নির্দিষ্ট শাসকের প্রতি আনুগত্য তৈরি হবে, যার ফলে নিয়ন্ত্রণের প্রতি দ্বৈত দায়বদ্ধতার যে কাঠামোটি এখনও বর্তমান তা ভেঙে পড়বে।   

দ্বৈত নিয়ন্ত্রণ, ক্ষমতার শ্রেণীবিন্যাস এবং কেন্দ্রীভবনঃ জনকল্যাণমূলক প্রকল্পের উদাহরণ দিয়ে ব্যাখ্যা
মোদী সরকারের নেতৃত্বে ঘটে চলা কেন্দ্রীভবনের সবচেয়ে স্পষ্ট চেহারাগুলির মধ্যে একটি হল কেন্দ্রের আমলা ও তৃণমূল স্তরের মধ্যে ক্রমশ বাড়তে থাকা যোগাযোগ। প্রযুক্তির সাহায্যে দায়িত্ব বন্টনের এমন একটি প্রক্রিয়া ইতিমধ্যেই তৈরি হতে শুরু করেছে যেখানে রাজ্যসরকারের হস্তক্ষেপ একেবারেই উপেক্ষা করা যায়। এই সরাসরি দায়িত্ব গ্রহণের মধ্যে দিয়ে, জনকল্যাণকেন্দ্রিক রাজনীতি এবং সেই সংক্রান্ত যাবতীয় কৃতিত্বের দাবীগুলিকেও কেন্দ্রের দিকে ঠেলে দেওয়া হয়েছে। এই ঘটনা কি ভাবে সম্ভব হয়েছে? এবং আদি নকশার অন্তর্গত দ্বৈত দায়বদ্ধতার যে নিয়ন্ত্রণ ও ভারসাম্য আছে তা কি করে এই কেন্দ্রীকরণের গতি রোধ করতে অক্ষম? আংশিকভাবে হলেও, এর উত্তর পাওয়া যাবে আইন, শৃঙ্খলা ও ক্ষমতার শ্রেণীবিন্যাসের প্রতি ভারতীয় আমলাতন্ত্রের আকর্ষণ যা প্রাত্যহিক প্রশাসনিক কাজের ক্ষেত্রে একটি কেন্দ্রীভবনের সংস্কৃতিকে বিশেষ জায়গা দেয়। উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের যে কোন নির্দেশের উত্তরে প্রশাসনিক শৃঙ্খলের সমস্ত স্তরের আমলারা নিজেরদের বারংবার "ডাকঘরের কর্মীর বেশি কিছু নয়" বলে বর্ণনা করছেন শোনাটা খুব অস্বাভাবিক কিছু নয়। কোন "কাজ সম্পন্ন" করার জন্য এই সংস্কৃতিতে প্রয়োজন আদেশ করা ও নিয়ন্ত্রণ। "আদেশ ও নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র" রাজ্য ও কেন্দ্র - দুই জায়গার প্রশাসনিক বিভাগের বৈধ অংশ এবং এদের কাজ হল একবিংশ শতাব্দীর সর্বোত্তম প্রযুক্তি ব্যবহার করে আমলাদের পর্যবেক্ষণে রাখা ও তাঁদের অগ্রগতি ও উন্নতি আনুসরণ করা। সতর্কতা অবলম্বন করাকে দুর্নীতিকে উৎসাহ দেওয়ার সমান হিসেবে দেখা হয়। আদতে, দুর্নীতির বাস্তবিকতা, দক্ষতাহীনতা এবং রাষ্ট্রযন্ত্রের অক্ষমতা - এই সব একসঙ্গে মিলে আদেশ ও নিয়ন্ত্রণের কাঠামোকে সুদৃঢ় করতে সাহায্য করেছে। দক্ষতা বৃদ্ধি, দুর্নীতি রোধ ও দায়বদ্ধতার চর্চাকে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য কেন্দ্রীকরণকে একটি অতিপ্রয়োজনীয় উপায় বলে বৈধতা দেওয়া হচ্ছে। বা ল্যান্ট প্রিচেট যেমনভাবে একে বর্ণনা করেছেন, দায়বদ্ধতার বদলে "যা গণনা ও যাচাই করা যায়" তার প্রচলন করা হচ্ছে। আমলাতন্ত্র কেন বিকেন্দ্রীকরণের মাধ্যমে আঞ্চলিক সরকারের হাতে দায়িত্ব তুলে দেওয়াতে বাধা দেয় তার পিছনে এও একটি কারণ। এই সংস্কৃতিতে, একটি দক্ষ ও দায়িত্বশীল প্রশাসনের জন্য তৃণমূল স্তরের সঙ্গে আমলাদের সরাসরি যোগাযোগ একটি বৈধ ও তর্কযোগ্যভাবে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা। বিজেপির পক্ষ থেকে চরম রাজনৈতিক কৌশলটি হল, এই দায়বদ্ধতার কেন্দ্রীভূত সংস্কৃতিকে নিজেদের সুবিধার জন্য সফলভাবে ব্যবহার করার ক্ষমতা।   

আমলাতন্ত্র, প্রশাসনের দৈনন্দিন কাজে যুক্তরাষ্ট্রীয় উদ্দেশ্যকে তাই খুব কমই সমর্থন করে এবং ফলত, হয়ত নিজের অজ্ঞাতেই, রাজনৈতিক কেন্দ্রীভবনকে সুদৃঢ় করে তুলতে সাহায্য করে। এই ঘটনা সবচেয়ে ভালো বোঝা যায় সরকারি অর্থে চলা প্রকল্প বা সেন্ট্রালি স্পনসর্ড স্কিমস (সিএসএস) নিয়ে টানাপোড়েন থেকে। এই সিএসএস হল একটি প্রাথমিক ফিস্কাল ইন্সট্রুমেন্ট যার মাধ্যমে কেন্দ্রসরকার জনকল্যাণমূলক প্রকল্পগুলিকে অর্থসাহায্য করে এবং জনকল্যাণকেন্দ্রিক রাজনীতি এরই মাধ্যমে কেন্দ্রীভূত হয়েছে। যদিও এই প্রকল্পগুলি কেন্দ্র ও রাষ্ট্রের মধ্যে দীর্ঘস্থায়ী দ্বন্দ্বের কারণ, কিন্তু এগুলির নকশা আসলে তৈরি করেছেন কেন্দ্রের অধীনস্থ আমলারাই। প্রশাসনের দীর্ঘদিনের একটি অভ্যাস হল এই নকশা তৈরির সময় রাজ্যের সরকারগুলিকে সেগুলির বাস্তবায়নের দায়িত্বে রাখা এমনভাবে যাতে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ হিসেবে কেন্দ্রের কাছে তাঁদের জবাবদিহি করতে হয়। এমনকি, প্রাথমিক ব্যয়ের জন্য বরাদ্দ অর্থও কেন্দ্র এতটাই সাবধানে নিয়ন্ত্রণ করে যে, রাজ্যসরকারগুলির হাতে খুব সামান্যই অর্থ থাকে যা তাঁরা নিজেদের পরিকল্পনা খাতে বিনিয়োগ করতে পারেন। একটি দুষ্ট চক্র এইভাবে চালু হয়েছে। রাজ্যের কাজের প্রতিটি অংশে, সামান্য হলেও সরকারী আমলাদের ধারাবাহিক নিয়ন্ত্রণ, বিশেষ করে উত্তর ভারতের দরিদ্রতর রাজ্যগুলিতে, প্রাতিষ্ঠানিক সামর্থ্যের অভাবে বৈধতা পেয়েছে। রাজ্যস্তরে আরও বেশি রাজস্বসংক্রান্ত স্বাধীনতার কোন সমর্থক আমলাদের মধ্যে না থাকায়, বৃহত্তর রাজস্ব বিকন্দ্রীকরণের দাবী কোনভাবেই গভীরতর যুক্তরাষ্ট্রীয়তার দিকে যায় নি। পর পর দুটি ফিনান্স কমিশন প্রতিটি রাজ্যের জন্য রাজস্বের বর্ধিত বিকেন্দ্রীকরণ ও নিজস্ব প্রয়োজন ও অগ্রাধিকার অনুযায়ী অর্থ বরাদ্দ করার ক্ষমতা রাজ্যগুলির হাতে তুলে দেওয়ার জন্য সিএসএসকে আরও নমনীয় করার সুপারিশ করলেও, সিএসএস এখনও জনকল্যাণ সংক্রান্ত ব্যয়কে বাড়িয়ে চলেছে ও সেই খাতে নিজের আধিপত্য জারী রেখেছে। বিদ্যমান আমলাতান্ত্রিক সংস্কৃতি ও কেন্দ্রীকরণকে দৃঢ়তর করার রাজনৈতিক উদ্দেশ্যের এমন প্রায় নিখুঁত সমতার ফলাফলই এই অটল স্থিতাবস্থা।      

আমি প্রায়ই ভারতের যুক্তরাষ্ট্রীয় চুক্তিকে কেন্দ্রীকরণ ও বিকেন্দ্রীকরণের গণতান্ত্রিক দাবীর মধ্যে টানাপোড়েন বলে বর্ণনা করি। কিন্তু কেন্দ্রীকরণের শক্তি যে আদতে রাষ্ট্র নামক প্রতিষ্ঠানের কাঠামোর গভীরে ঢুকে আছে তা চিহ্নিত করা একান্তই প্রয়োজন। যখন একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র বৃহত্তর কেন্দ্রীকরণকে মেনে নেয়, যা এই মুহূর্তেই ভারতে ঘটছে, তখন রাজ্যের প্রতিষ্ঠানগুলি তাকে কার্যকরীভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না। তার বদলে, অধিকাংশ সময়ই তারা হয়ে ওঠে এই কেন্দ্রীকরণের এক অতি নমনীয় অংশীদার। 

যামিনী আইয়ার

Author

যামিনী আইয়ার নতুন দিল্লীর সেন্টার ফর পলিসি রিসার্চ (সিপিআর)-এর অধ্যক্ষ ও প্রধান কার্যনির্বাহী সম্পাদক। 

(Bangla Translation by Sritama Halder)
অনুবাদঃ শ্রীতমা হালদার