২০১৭ সালে একজন বিশিষ্ট বিজেপি সদস্য বলেন, “কংগ্রেস দলের কাছে গান্ধী যেমন একটি রাজনৈতিক ব্র্যান্ড ইকুইটি ছিলেন, দীনদয়াল উপাধ্যায় ভারতীয় জনতা দলের জন্য তেমনই হয়ে উঠেছেন।” এবং বাস্তবিকই, বিজেপির পূর্বসূরি, ভারতীয় জনতা সঙ্ঘের প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক (১৯৫২-৬৮) দীনদয়াল উপাধ্যায়ের (১৯১৬-৬৮) জন্মশতবার্ষিকী উদ্যাপন উপলক্ষে বর্ষব্যাপী নানা অনুষ্ঠান শেষ হওয়ার পরে সে বিষয়ে কোন সন্দেহই বাকি থাকে না। ২০১৪ সালে ভারতের লোকসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে ফিরে আসার পর থেকেই দীনদয়াল উপাধ্যায়কে জাতীয় প্রতীক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য বিজেপি সমবেতভাবে চেষ্টা করে চলেছে। এই উদ্যাপনের অংশ হিসেবে নানা পদক্ষেপ নেওয়া হয়। যার মধ্যে কয়েকটি হল, নেহরু মেমোরিয়াল মিউজিয়াম অ্যান্ড লাইব্রেরীতে দীনদয়াল উপাধ্যায়ের জীবন নিয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রদর্শনী, গ্রন্থাগারের সেমিনার গৃহে নেহরুর প্রতিকৃতি সাময়িকভাবে সরিয়ে সেখানে উপাধ্যায়ের প্রতিকৃতি রাখা এবং কাজের শ্রেষ্ঠ প্রেরণা হল জনকল্যাণ – উপাধ্যায়ের এই মত অনুসরণ করে, রেস কোর্স রোডের নাম পরিবর্তন করে লোক কল্যাণ মার্গ রাখা। নীতি ও কর্মপন্থার ক্ষেত্রে, , দীনদয়াল উপাধ্যায়ের উন্নয়নের স্বপ্নের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন করে দীনদয়াল উপাধ্যায় গ্রাম জ্যোতি যোজনা নামে বিজেপির নেতৃত্বে গঠিত সরকারের নিজস্ব বৈশিষ্টপূর্ণ একটি গ্রামীণ বিদ্যুতায়ন প্রকল্প চালু হয়েছে। এবং, “অখণ্ড মানবতাবাদ” – বিজেপির এই অভেদ্য দর্শনের সৃষ্টিকর্তা অবশ্যই দীনদয়াল উপাধ্যায়।
আজ উপাধ্যায় এমন একটি খ্যাতি উপভোগ করছেন যা তিনি তাঁর জীবদ্দশায় পান নি। তবে, তিনি যে তুলনামূলকভাবে একজন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিত্ব ছিলেন, সেই বিষয়টি বিজেপিকে নিজেদের পছন্দ মত উপাধ্যায়ের স্মৃতির পুনর্গঠন করে একটি বাস্তবতাবর্জিত আখ্যান নির্মাণে সাহায্য করেছে। তাঁর জীবনের বহু গুরুত্বপূর্ণ দিক ও চিন্তাধারা, যা সঙ্ঘ পরিবার বা বিজেপির জনক রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘের (আরএসএস) অন্তর্ভুক্ত বিভিন্ন দলের আভ্যন্তরীণ সমস্যাকে সামনে আনে, সেগুলিকে উপেক্ষা করা হয়েছে।
লক্ষণীয়ভাবে, উপাধ্যায়ের মত একজন সমর্পিতপ্রাণ আরএসএস কর্মীই প্রথম হিন্দু জাতীয়তাবাদের একটি অর্থনৈতিক কার্যাবলীর বনিয়াদ স্থাপন করেন। এই বিষয়ে তিনি ১৯৫৮ সালে দ্য টু প্ল্যানসঃ প্রমিসেস, পারফর্মেন্সেস, প্রসপেক্টস ও ভারতীয় অর্থনীতিঃ বিকাশ কি এক দিশা নামে দুটি পুস্তক রচনা করেন। এই নীতি ও কর্মপন্থার প্রায়োগিক আলোচনা বইদুটির বিষয় নয়। তবে, হিন্দু জাতীয়তাবাদ কি উপায়ে নিজেদের মূলস্রোতে প্রতিষ্ঠিত করার চেষ্টা করছে এমন একটা সময় যখন তার অবস্থান একেবারেই প্রান্তিক, তার কিছু উল্লেখযোগ্য দিক নিয়ে এই বইদুটি আলোচনা করেছে। আরএসএসের একজন প্রাক্তন সদস্য গান্ধীকে হত্যা করায় স্বল্প সময়ের জন্য এই দলকে নিষিদ্ধ বলে ঘোষিত হয়। এই কারণে সেই সময় জন সঙ্ঘের উদ্দেশ্য ছিল আরএসএসের কলঙ্কিত পরিচিতি থেকে নিজেদের বিচ্ছিন্ন করা। সঙ্ঘের ভিত্তি ছিল মূলত উত্তর ভারতের নাগরিক ব্যবসায়ী গোষ্ঠী। এই রাজনৈতিক দল তাই জাতীয় অর্থনৈতিক উন্নয়নের কার্যক্রমের পরিকল্পনা এমনভাবে করার চেষ্টা করছিল যা শুধু তাদের সমর্থকদের স্বার্থকেই বিবেচনা করে না, তার পাশাপাশি আরও বিস্তৃত হয়ে অন্যান্য বৃত্তিধারী শ্রেণীকেও আহ্বান জানায়।
১৯৫০-এর দশকে পুঁজিনির্ভর, কেন্দ্রীয়ভাবে পরিকল্পিত যে অর্থনৈতিক কার্যক্রমের অনুসরণ করা হচ্ছিল, তার বিপরীতে গিয়ে উপাধ্যায় একটি বিকেন্দ্রীকৃত, শ্রমভিত্তিক শিল্পায়নের ধারণা পেশ করেন। প্রকৃতপক্ষে তিনি ভারতীয় অর্থনৈতিক নীতি নির্ধারণের শীর্ষ সংস্থা প্ল্যানিং কমিশনকে পুরোপুরি বাতিল করে দেওয়ার প্রস্তাব করেন। ক্ষুদ্র শিল্পের মাধ্যমে উৎপাদন ও স্বল্প পুঁজির (ছোটে উদ্যোগ আর ছোটি পুঁজি) উপরই তাঁর এই বিকল্প অর্থনীতির মনোযোগ ছিল। এই ভাবে, জন সঙ্ঘের মূল বনিয়াদের প্রাধান্য বজায় রাখার পাশাপাশি, এই জাতীয় অর্থনীতি উৎপাদনের সামগ্রিক পরিমাণ বাড়িয়ে তোলে। এই উদ্দেশ্যের প্রতি অবিচলিত থেকে উপাধ্যায় যে, পরিবহনের ক্ষেত্রে বিনিয়োগকে অন্তর্দেশীয় জলপথ ও সড়কের দিকে চালিত করার প্রস্তাব করেন। এর ফলে স্বদেশী বাণিজ্যের অগ্রগতি মসৃণ হবে এবং জনগণ কাজের খোঁজে শহর ও নগরে জড়ো হবেন না। উপাধ্যায়ের মতে, গ্রাম থেকে কাজের খোঁজে নগরে পরিযাণ পরিবারকে খণ্ডিত করে, যা নৈতিক পতনের কারণ।
উপাধ্যায়ের প্রচেষ্টা ছিল তাঁর এই বিকল্প অর্থনীতির পরিকল্পনাকে সাংস্কৃতিক দিক থেকে একটি ভূমিজবাদী বা নেটিভিস্ট প্রকল্প হিসেবে গড়ে তোলা। এর ফলাফল ছিল বেশ কিছু বুদ্ধিগত ও বস্তুগত নির্বাচন। ভারতীয় অর্থনীতি বইটিসংস্কৃত ঘেঁষা হিন্দিতে লেখা। বইটি জুড়ে বেদের মত হিন্দু ধর্মগ্রন্থ থেকে সংগৃহীত উদ্ধৃতি ছড়িয়ে আছে। তাছাড়াও, এই বইটি স্বদেশীর মত জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের ভাষাকে আত্মস্থ করে, যা বিদেশী পণ্য বর্জন ও দেশজ দ্রব্যের ব্যবহারে অনুমোদন দেওয়াকে ইঙ্গিত করে। তবে, এই বিকল্প অর্থনীতির নকশাটি গান্ধিবাদী অর্থনীতির কল্পনা থেকে আলাদা ছিল, কারণ উপাধ্যায়ের প্রকল্পটি সেভাবে যন্ত্রপাতি ব্যবহারের পক্ষপাতি নয়। বরং, এর অভিপ্রায় ছিল ক্ষুদ্র শিল্পজাত উৎপাদনকে আধুনিকীকরণের জন্য ব্যবহার করা ও অস্বাভাবিক বিশালত্বের প্রতি সেই যুগের আকর্ষণকে পরিহার করে চলা। এইভাবে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী সমর্থকদের তুষ্ট করার পাশপাশি উন্নয়নের একটি সর্বাঙ্গীণ ধারণাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব। ভূমিজবাদের ধারণা এমন একটি মনোভাব তৈরি করে যা বৈদেশিক বাণিজ্যকে সন্দেহের চোখে দেখে এবং যে মনোভাব অনুযায়ী, সুপারপাওয়ার বা মহাশক্তিধর দেশগুলির থেকে পাওয়া সাহায্য ও বিশেষ দক্ষতা, যা পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল, দুই-ই ভারতের সার্বভৌমত্বকে বিপন্ন করে।
হিন্দু জাতীয়তাবাদের কাঠামোর একটি অন্যতম স্তম্ভ হল ঐক্যবদ্ধ হিন্দু সমাজ। বিভিন্ন নীতির বিষয়ে উপাধ্যায়ের মতামতের উপর এই ধারণাটির প্রভাব পড়েছিল। এই কারণেই তাঁর মতে, শ্রেণি/জাতিভিত্তিক বিভাজনের রাজনীতির দিকে গিয়ে শ্রম কোনমতেই যেন সমাজকে খণ্ডিত না করে। তার বদলে, ধর্ম ও জাতিভিত্তিক শ্রেণীবিভাগের দ্বারা চালিত একটি সমন্বিত ও অখণ্ড সমাজের উন্নয়নের প্রতি মনোযোগ দিতে হবে। একতার উপর এই জোর দেওয়ার কারণেই তিনি জমি আইন সংশোধনের পদক্ষেপ নেওয়ার বিরোধিতা করেছিলেন, কারণ তার ফলে জমির মালিকানা বিভাজিত হবে।
এই পরিকল্পনাটির উদ্ভাবনের সময়, উপাধ্যায় দুজন আরও বেশি পরিচিত অর্থনীতিবিদের কথা উল্লেখ করেছেন। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের আগে জাপান শিল্পায়নের যে কৌশল এবং বাণী, অর্থাৎ ফুকুকু কিয়োসেই (ধনী দেশ, শক্তিশালী সামরিক বাহিনী), গ্রহণ করেছিল তার দ্বারা এঁরা প্রভাবিত হয়েছিলেন। তাঁরা ভারতের অর্থনীতিকেন্দ্রিক চিন্তাধারার বিকল্প উৎস হিসেবে যে ভাবনাগুলিকে চিহ্নিত করেন সেগুলি সাধারণত একচেটিয়াভাবে সোভিয়েত ইউনিয়ন, ইউনাইটেড কিংডম এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে জড়িত। সোভিয়েত দেশের ভারি শিল্প ও ক্যাপিটাল-গুডস বা পুঁজি-পণ্য নির্ভর অর্থনৈতিক কাঠামোর বিপরীতে, আগেকার জাপানের অর্থনৈতিক নকশাটি কৃষিশিল্পের গুরুত্ব না বিন্দুমাত্র কমিয়ে, ক্ষুদ্র শিল্পনির্ভর উৎপাদনের উপর মনোযোগ দিয়েছে। পূর্বের জাপানের নকশার উপর ভিত্তি করে, বম্বের মুদ্রাবিষয়ক অর্থনীতিবিদ সি. এন. ভকিল পুঁজি-পণ্য নকশার বিকল্প হিসেবে উন্নয়নের একটি ওয়েজ-গুডস বা বেতন-পণ্য নকশা বিষয়ক মতবাদ প্রচার করেন। তাঁর মতে, এই বেতন-পণ্য নকশাটিকেই অগ্রাধিকার দেওয়া উচিত এবং এর সাহায্যে ভারত উন্নয়নের পথে অবিচলিতভাবে এগিয়ে যাবে। বেতন-পণ্যের বিপণনযোগ্য উদ্বৃত্তের সম্প্রসারণ ও কনসাম্পশান মাল্টিপ্লায়ারের যৌক্তিকতা ঠিক কতটা গুরুত্বপূর্ণ সে বিষয়ে আলোচনার সময় উপাধ্যায় তাঁর বইতে ভকিলের কথা উল্লেখ করেছেন। তিনি তাঁর শ্রমের পরিচালনা বিষয়ক ধারণা নির্মাণ করেছিলেন মাইশোরের ইঞ্জিনীয়ার এবং ভারতের পরিকল্পনার জনক বিশ্বেশ্বরায়ার ভাবনার উপর ভিত্তি করে। জাপানের শ্রমের শৃঙ্খলা বিশ্বেশ্বরায়াকে মুগ্ধ করেছিল এবং তিনি বিশ্বাস করতেন যে জেলাস্তরে উন্নয়ন জোরপূর্বক কাজের মাধ্যমে হওয়া উচিত।
শ্রমের প্রতি উপাধ্যায়ের মনোভাব ও আমদানি করা পণ্যের প্রতি বিতৃষ্ণাকে এগিয়ে নিয়ে গেছে আরএসএসের সঙ্গে সংযুক্ত ভারতীয় মজদুর সঙ্ঘ (ইন্ডিয়ান ওয়ার্কারস’ অরগানাইজেশান বা বিএমএস) ও স্বদেশী জাগরণ মঞ্চ (ফোরাম ফর দা ন্যাশনাল অ্যাওকেনিং অফ ইকোনমিক সেলফ-সাফিসিয়েন্সি বা মঞ্চ) নামের দুটি সংগঠন। ১৯৫৫ সালে প্রতিষ্ঠিত বিএমএস বর্তমানে ভারতের বৃহত্তম শ্রমিক ইউনিয়ন। একটি কম্যুনিজম বিরোধী ইউনিয়ন হিসেবে, বিএমএস শ্রেণীদ্বন্দ্বকে টিঁকিয়ে রাখার চেষ্টা করে। এবং ছোট আকারের উৎপাদনের কাজে প্রযুক্তি ব্যবহারকে অনুমোদন দেওয়া ও শ্রমিকদের স্থানচ্যুত করে এমন বিদেশী যন্ত্রপাতির ব্যবহারের বিরুদ্ধে প্রচার চালান স্বত্ত্বেও, এই ইউনিয়ন সাধারণত বৃহত্তর কারখানার উদ্যোগের সঙ্গেই জড়িত ছিল। উপাধ্যায়ের সঙ্গে এই ইউনিয়নের সরাসরি যোগাযোগ তৈরি হয়েছে এর প্রতিষ্ঠাতা দত্তপান্ত ঠেঙ্গাদির মাধ্যমে, যিনি অখণ্ড মানবতাবাদকে বিএমএসের দর্শন হিসেবে গ্রহণ করেছিলেন ও উপাধ্যায়ের উপর দুটি বই লিখেছিলেন।
ভারতের অর্থনীতির উদারীকরণের ঠিক পরেই, ১৯৯১ সালে ঠেঙ্গাদি ও তাঁর চারজন সহযোগী স্বদেশী জাগরণ মঞ্চের প্রতিষ্ঠা করেন। বিদেশী প্রতিযোগিতা থেকে দেশজ ব্যবসার স্বার্থকে রক্ষা করাই এই মঞ্চের উদ্দেশ্য। বিদেশি পণ্য বর্জনের ডাক দেওয়া এবং মুক্ত বাণিজ্যের বিরুদ্ধে প্রচার করা ছাড়াও, এই মঞ্চ ভারতের ইনটেলেকচুয়াল প্রপার্টি রাইট ব্যবস্থার সংশোধনের বিরোধতা করেছে। এই সংশোধন বাস্তবায়িত হলে বিদেশী উৎপাদনকারী সংস্থাগুলি পেটেন্ট হওয়া পণ্য, বিশেষ করে যা কৃষিশিল্পের সঙ্গে সংযুক্ত, সেগুলির উপর একচেটিয়া অধিকার পাবে। ভারতে সরাসরি বিনিয়োগকারী বিদেশী সংস্থাগুলিকে এই মঞ্চ সবচেয়ে কঠোরভাবে বিরোধিতা করে।
জন সঙ্ঘের জন্য একটি অর্থনৈতিক মঞ্চ তৈরি করার যে প্রচেষ্টা করেছিলেন উপাধ্যায়, তার অর্ধ শতকেরও বেশি সময় পরে, ২০১৪ সালের নির্বাচনের সময় বিজেপি তার এথনোমেজরিটারিয়ান বা জাতিভিত্তিক সংখ্যাগরিষ্ঠতাকেন্দ্রিক কার্যসূচীর সম্পূরক হিসেবে, তাদের বিকাশের ধারণাকে প্রচারের জন্য একটি অত্যন্ত ভিন্ন ধরনের মঞ্চ ব্যবহার করে। ভাষ্যকাররা এই প্রচারের দিকেই বেশি করে ধাবিত হতে থাকেন, কারণ এর প্রতিশ্রুতি ছিল বিদেশী বিনিয়োগকে ভারতে আনা ও অর্থনীতির আধুনিকীকরণ। রিটেলের মত সেক্টরগুলি এখন বিদেশী বিনিয়োগের প্রতি অনেক বেশি বন্ধুত্বপূর্ণ। গত আট বছর ধরেই পরিষেবা শিল্পের পরিচালনায় কর্মহীন উন্নয়ন এবং অর্থনৈতিক নীতি নির্ধারণ প্রনালীর ক্রমশ আরও বেশি করে কেন্দ্রীকৃত হওয়ার ঘটনা ঘটে চলেছে। সঙ্ঘ পরিবারে অনেক নির্বাচনী এলাকাই এখনও স্বদেশী উৎপাদন, বিকেন্দ্রীকরণ এবং শ্রমশক্তি নিয়ে উপাধ্যায়ের যে স্বপ্ন ছিল তার প্রতি বিশ্বস্ত এবং সেই কারণে এই ধরনের আচরণ সঙ্ঘ পরিবারে আভ্যন্তরীণ উত্তেজনা সৃষ্টি করছে। হয়ত সেই জন্যই অনেক বেশি নমনীয় ও অলীক এক উপাধ্যায়ের আখ্যান নির্মাণের চেষ্টা করছে বিজেপি। অনুসরণ করার পক্ষে ঐতিহাসিক উপাধ্যায় অনেক কঠিন। কিন্তু কর্মহীন জনসংখ্যা যত বাড়ছে, রাজ্য সরকারগুলি তত বেশি করে খেয়াল করছে যে, কেন্দ্র ঠিক কী ভাবে প্রয়োজনীয় সম্পদ শোষণ করে নিচ্ছে। ভারতে বিদেশী বিনিয়োগের অবিচল অনুপ্রবেশ বৃদ্ধি পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আশা করা যায় যে, অনেক কন্ঠস্বরই বিএমএস ও স্বদেশী জাগরণ মঞ্চের সঙ্গে যোগ দেবে।