ভারতের অন্তর্ভুক্তি-নির্ভর অর্থনৈতিক নীতিঃ লিঙ্গ বৈষম্যের সুবিধা নিয়ে মুনাফা বাড়িয়ে তোলা

10/04/2023
IiT English Page

ক্ষুদ্র অর্থনীতি বা মাইক্রোফাইন্যান্স, অর্থাৎ সামাজিক বা অর্থনৈতিকভাবে দুর্বল মহিলা গোষ্ঠীকে কোনও রকম জামানত ছাড়াই টাকা ধার দেওয়ার ঘটনাটি ভারতের অর্থনীতি বিষয়ক খবরে আধিপত্য করে চলেছে। এই সেক্টরে দেশীয় ও বিশ্বজনীন, মূলধনের দুই উৎস থেকেই নতুনভাবে বেশ বড় পরিমাণের বিনিয়োগ হচ্ছে। ভারতীয় ব্যাঙ্কের পারস্পরিক আন্তঃসম্পর্কে, অসংখ্য ক্ষুদ্র অর্থনীতি সংস্থা বা মাইক্রোফাইন্যান্স ইনপ্সটিট্যুশন (এমএফআই) -এর পক্ষে প্রান্তিক গোষ্ঠীগুলির এই “অর্থনৈতিক অন্তর্ভুক্তি” যাতে খুবই লাভজনক হয়, তা এই বিনিয়োগগুলি নিশ্চিত করে। মাত্র এক দশক আগেই ভারতের মাইক্রোফাইন্যান্স সেক্টর ভারতীয় মিডিয়ার ক্ষোভের লক্ষ্য ছিল। জোর করে ঋণের টাকা আদায় করার এবং আত্মহত্যার মত ঘটনাগুলিকে সামনে এনে, অন্ধ্রপ্রদেশের মিডিয়া সেখানকার এমএফআই-কে বহুবারই প্রশ্নের সামনে দাঁড় করিয়েছে। তা সত্ত্বেও, যাঁদের এই ব্যবস্থা থেকে উপকৃত হওয়ার কথা, আজ এমএফআইগুলি তাঁদের জীবনের বাস্তবতা থেকে সম্পূর্ণভাবে বিচ্ছিন্ন এবং সংবাদ মাধ্যমগুলির মনোযোগ শুধুমাত্র বিমূর্ত সংখ্যা ও নীতির উপর চলে গেছে। তবে, দরিদ্র মাহিলাদের সাহায্যের উদ্দেশ্য নিয়ে কাজ করার ফলে, এই সেক্টরটি যথেষ্ট নৈতিক কর্তৃত্ব জাহির করে চলে। কিন্তু, মহিলাদের যে ধরনের সহায়তা ও পরিষেবার প্রয়োজন, এমএফআইগুলি কি তা সরবরাহ করে? এবং যে শিল্প, শেয়ারহোল্ডাররা ঠিক কতটা লাভের মুখ দেখছেন, সম্পূর্ণভাবে তার উপর নির্ভরশীল, সেই শিল্প কি ভাবে ভারতের অর্থনৈতিক পরিকাঠামোর অন্তর্গত দুর্বল গোষ্ঠীগুলি থেকে মহিলাদের বাদ পড়ার প্রশ্নটিকে তুলে ধরার মাধ্যম হিসেবে বিবেচিত হয়ে চলে? 

ভারতের মাইক্রোফাইন্যান্স নিয়ে করা এক দশক ধরে গবেষণার উপর ভিত্তি করে লেখা আমার সাম্প্রতিক বইটিতে আমি দেখিয়েছি যে, বাদ পড়া মহিলাদের সাহায্য করার যে বাহ্যিক উদ্দেশ্য ভারতের ক্ষুদ্র অর্থনীতি শিল্পের ছিল, তা থেকে শুধু এই শিল্প সরেই যায় নি, খুব কম ক্ষেত্রেই এমএফআই তাদের কাজের কৌশল নির্ধারণের সময় ওই মহিলাদের বাস্তব চাহিদাকে বিবেচনা করেছে। পক্ষান্তরে, এই সংস্থাগুলির দৈনন্দিন কার্যপ্রণালীতে, আভ্যন্তরীণভাবে ও মক্কেলদের সঙ্গে কাজের সময় – এই দুই ক্ষেত্রেই সংগঠিতভাবে লিঙ্গ বৈষম্যের চর্চা হয়।     

যে মহিলা ঋণগ্রহণকারী বিভিন্ন দল তৈরি করে, সদস্যদের ব্যক্তিগত তথ্য কৌশলে ব্যবহার করার মাধ্যমে ধার শোধ নিশ্চিত করেন, এই শিল্পটি নিজের লাভের জন্য তাঁর মজুরিহীন শ্রমকে ব্যবহার করে। উদাহরণ হিসেবে উল্লেখ করতে পারি, ব্যাঙ্গালুরুতে শান্থি নামে একজন দলনেত্রীর সঙ্গে আমার পরিচয় হয়, যিনি তাঁর প্রতিবেশীদের “সাহায্য” করছেন বলে দাবি করেন। তাঁর এবং তাঁর দলের সঙ্গে আরও কিছুক্ষণ কথা বলার পর স্পষ্ট হয় যে, সমাজে নিজের অবস্থান ও প্রতিষ্ঠাকে কৌশলে কাজে লাগিয়ে, এমএফআই-এর বিশেষ শর্ত ও প্রয়োজনের সঙ্গে সাযুজ্য রেখে তিনি এমনভাবে মহিলাদের দলগুলি তৈরি করেন, যাতে তুলনায় অর্থবান ও দরিদ্রতর, শিল্পোদ্যোক্তা, যাঁরা ভাড়া বাড়িতে থাকেন ও যাঁরা নিজের বাড়ির মালিক, এমন মহিলারা নির্দিষ্ট সংখ্যায় ওই দলের সদস্য হিসেবে উপস্থিত থাকেন। এমএফআই-এর জন্য এই ধরনের সামাজিক পরিলেখগুলি প্রয়োজন আছে। ঋণ গ্রহণের ফলে নানা রকম ঝুঁকি তৈরি হতে পারে এবং এইভাবে দল তৈরি করলে, ওই ঝুঁকিকে অনেকের মধ্যে ভাগ করে দেওয়া যায়। অথচ, যে সমস্ত এলাকা ইতিমধ্যেই সাবপ্রাইম ঋণের দায়ে জর্জরিত সেখানে একদম গোড়া থেকে এই জাতীয় গোষ্ঠী তৈরি করার জন্য যে ধরনের জ্ঞানের প্রয়োজন, তা এমএফআই কর্মীদের মধ্যে অনুপস্থিত। যাতে তাঁরা দলবদ্ধভাবে একটি ঋণ নেন, তার জন্য শান্থি তোষামোদ বা জবরদস্তি করে ভিন্ন ভিন্ন স্বার্থের মহিলাকে জড়ো করেছেন, কিন্তু তাঁর দাবি ওই মহিলাদের “সাহায্য” করার জন্যই এই কাজ তিনি করেন। শান্থি নিশ্চয়ই নিজের সুবিধা মাথায় রেখেই কাজটি করেছেন, কিন্তু এমএফআই যে তাঁর কাজের ফলে যে মোটা লাভ করে সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই, যদিও তিনি তাদের থেকে কোনও রকম বেতন পান না।     

একটি ক্ষুদ্রাকৃতির শিল্পোদ্যোগ চালিয়ে স্বনির্ভর হওয়ার সুযোগ মহিলাদের হাতে তুলে দেয় বলে মাইক্রোফাইন্যান্সের খ্যাতি আছে। কিন্তু, ভারতের মহিলা ঋণগ্রহণকারীরা তাঁর ঋণের টাকা ব্যবহার করেন ছেলেমেয়ের শিক্ষাখাতে, চিকিৎসার প্রয়োজনে বা অন্য উচ্চতর অঙ্কের ধার শোধ করার জন্য। এইভাবে, তাঁরা নিজেদের ক্ষতি স্বীকার করেই ঋণের অর্থ অন্যান্য খাতে ঘোরান, যাতে তাঁরা অত্যন্ত অনিশ্চিতভাবে জীবনধারণে সক্ষম হন। এমএফআই এই অবস্থা থেকেও লাভ তুলতে পারে। ঋণকারী তাঁর ধার শোধ করতে পারলে, তার পরের বছর তিনি আরও বড় অঙ্কের ঋণ নিতে পারেন।। এই ব্যবস্থার ফলে, ঋণ পরিশোধের আগে একজন নতুন মক্কেলের পিছনে যথেষ্ট পরিশ্রম দেওয়ার বদলে, পূর্বপরিচিত ঋণগ্রহণকারীকে আবার ধার দিয়ে এমএফআইগুলি তাদের লাভের অঙ্ক আরও বাড়িয়ে ফেলতে পারে।      

এমএফআই-এর মহিলাকর্মী, যাঁদের অধিকৃত পদ অনেক ঋণগ্রহীতারই ঈর্ষার কারণ, তাঁরা অনেক সময়ই পেশাগত উন্নতির দিক থেকে আটকে যান।  আমি যে মহিলাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলেছি তাঁরা মক্কেলদের সঙ্গে প্রাত্যহিক যোগাযোগ রাখেন এবং অনেক সময়ই তাঁদের যেন মাথায় একটা অত্যন্ত ভারি বোঝা বয়ে নিয়ে বেড়াতে হয়। এর কারণ, তাঁদের কাজ হল এমন মহিলাদের ঋণ পরিশোধে সহায়তা করা যাঁদের সে আর্থিক সামর্থ্যই নেই। নাদিয়া, একজন এমএফআই কর্মী, আমাকে একজন মহিলার কথা বলেন, যিনি একটি গোষ্ঠীকে গড়ে তলতে সাহায্য করেছিলেন এবং পরে তিনি ঋণের টাকা শোধ না করই পালিয়ে যান। ওই গোষ্ঠী তারপর প্রত্যেক মাসের দেয় অর্থ জোগাড় করতে পারতেন না। প্রতি বারই, অন্যান্য সদস্যদের ঋণের টাকা পূরণ করার জন্য তাঁদের কঠিন লড়াই করতে হত। এই সমস্যাটির বিষয়ে কর্তৃপক্ষকে জানালে নাদিয়া এবং ঋণগ্রহীতা দু পক্ষের নথিতেই তার নেতিবাচক ছাপ পড়ত। সেই জন্য কাউকে না জানিয়ে ওই পলাতক সদস্যের বাড়িতে ঢুকে তাঁর জলের ফিল্টার এবং অন্যান্য যা কিছু হাতের কাছে পাওয়া যাবে সেগুলি তুলে নিয়ে এসে, বিক্রি করে তাঁর ঋণের অংশ শোধ করার জন্য নাদিয়া ওই দলের অন্যান্য সদস্যকে উৎসাহ দেন। তাঁরা সেই অনুযায়ী কাজ করেন এবং খুবই “খুশি” হন, কারণ নাদিয়া পরের বছর আরেকটি ঋণের ব্যবস্থা করে দেন। এই সমস্ত ঘটনাই সংস্থার আনুষ্ঠানিক বিবৃতি থেকে বাদ দেওয়া হয় এবং যথাযথ সময়ে প্রদত্ত ঋণের টাকা ফেরত আসা অব্যাহত থাকায়, এমএফআইগুলি তার বিনিয়োগকারীদের প্রচুর পরিমাণে লভ্যাংশ দিতে পারে। যে মহিলাকর্মীদের সঙ্গে আমি কথা বলেছি।,তাঁদের মধ্যে অনেকেই আভ্যন্তরীণ সুবিধা পাওয়া থেকে বঞ্চিত হয়ে থাকেন বা, যদি তাঁরা কর্পোরেট স্তরের পদাধিকারী হন, তাহলে অন্যান্য মহিলাকর্মীদের অনির্ভরযোগ্য বলেই বিবেচনা করেন। 

এই বাস্তব চিত্রগুলি সকলের চোখের সামনে প্রকটভাবেই আছে, কিন্তু তা সত্ত্বেও ভারতীয় সংবাদ মাধ্যমে এমএফআইগুলিকে অত্যন্ত ইতিবাচকভাবে তুলে ধরা হয়। দেশ ও বিদেশের সামাজিক সুবিধাপ্রাপ্ত শ্রেণী যে চোখে এই মহিলা ঋণগ্রহীতাদের দেখেন, তার প্রভাবেই এমএফআই এবং নারীর ক্ষমতায়নের মধ্যে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগের আখ্যানটি যে প্রলম্বিত হচ্ছে। যাঁরা ঋণ নিয়ে থাকেন, তাঁরা বেশির ভাগই আসেন অনিশ্চিত সামাজিক অবস্থান থেকে, কিন্তু, শোষণ ও চরম দারিদ্রে ভরা এলাকার বাসিন্দা হলেও, অনেক সময়ই ওই ঋণগ্রহীতারা দরিদ্র নন। তবুও, বস্তি এলাকার বাইরে যাঁরা থাকেন তাঁরা বস্তির অভ্যন্তরের অসংখ্য বিচিত্র পরিস্থিতির কথা প্রায়সয়ই বিবেচনা করেন না। তার বদলে, আমরা তাঁদের এমন এক সমজাতীয় বা হোমোজেনাস গোষ্ঠী হিসেবে দেখে থাকি যা, নির্মিত হয়েছে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী বা ন্যায়পরায়ণ মা-কর্মীদের দিয়ে, যাঁরা পরিবারের কল্যাণের জন্য কাজ করে চলেন। আমরা ধরে নিই যে, এই মহিলাদের স্বামীরা সবাই অপদার্থ, মদ্যপ পুরুষ। এমএফআই এবং ক্ষুদ্র অর্থনীতি নির্ভর ব্যাঙ্ক বা স্মল ফাইনান্স ব্যাঙ্ক (এসএফবি) এই ধারণাগুলিকে আরও বাড়িয়ে তোলার জন্য তাদের মক্কেলদের “সাফল্যের কাহিনী”-কে প্রচার করে, যে কাহিনী একজন নারীর সাফল্যের পিছনে উচ্চহারের সুদসহ ঋণের ভূমিকাকে নিয়েও অত্যুক্তি করে থাকে। আমি সেলভির যে সাক্ষাৎকারটি নিয়েছিলাম, তাতে আমি আবিষ্কার করি যে, ওই মহিলাদের দ্বারা গৃহীত ঋণ তাঁদের জীবনে যে পরিবর্তন এনেছে, তাকে আরও উঁচুতে তোলার জন্য, এমএফআইগুলি এই মহিলাদের জীবনকাহিনীর জটিলতাকে নিপুণভাবে ব্যবহার করে। অন্যভাবে দেখলে, শোষক অর্থনৈতিক কোম্পানিগুলি শুধুমাত্র মহিলা ঋণগ্রহণকারীদের শ্রম ও তাঁদের পরিশোধ করা অর্থ থেকেই মুনাফা করে না, ঋণদাতা পরিচয়ের বদলে, গরীবের বন্ধু হিসেবে নিজেদের বৈধতা দেওয়ার জন্য, ওই মহিলাদের জীবনকাহিনীকেও আত্মস্থ করে নেয়। যে ধরনের টেঁকসই শিল্পোদ্যমের ফলে দারিদ্রের তীব্রতা লাঘব হবে বা মহিলাদের জীবন থেকে দারিদ্র সম্পূর্ণ দূরীভূত হবে, সেগুলির সূচনা করতে তারা ওই মহিলাদের সাহায্য করে বলে দাবি করে।   

এই শিল্প যেমন দাবি করে, ক্ষুদ্র ও উচ্চহারের সুদসহ অর্থনৈতিক পণ্য আদৌ শ্রমজীবী মহিলাদের প্রয়োজনের দ্বারা প্রভাবিত হয় কিনা – এই মূল প্রশ্নটি থেকে আমাদের নজর সরে গেছে। অন্যান্য শিল্পের মতই, অর্থনৈতিক ফাটকাবাজি, শেয়ারহোল্ডারদের স্বার্থ এবং রাষ্ট্র ও বাজার-নির্ভর স্বার্থের মধ্যে আন্তঃনির্ভরশীলতা এমন সব নীতি ও অভ্যাসের নির্মাণ করেছে যা, নাগরিক হিসেবে মহিলা ঋণগ্রহণকারীর জন্য যে প্রশ্নগুলি গুরুত্বপূর্ণ, সেগুলিকে এড়িয়েই চলে। মহিলা ঋণগ্রহীতাদের জীবনে ঠিক কি প্রয়োজন, সেগুলি একমাত্র তখনই এমএফআইগুলির কাছে প্রাসঙ্গিক হয়ে পড়ে, যখন তারা প্রশিক্ষণের জন্য নতুন কার্যক্রম বা নতুন উপভোক্তাদের জন্য অর্থনৈতিক পণ্যের পরিকল্পনা করেন। এবং এইসব ক্ষেত্রে, এই পদক্ষেপগুলি মহিলাদের স্বল্প বা মধ্যমেয়াদী লক্ষ্যের উদ্দেশ্য সাধন করবে কিনা, প্রশ্ন তা নয়। বরং, প্রশ্নটি হল, মহিলা ঋণগ্রহণকারীরা আদৌ এতে অংশ নেবেন কিনা। এমএফআই নিজেদের যে চিত্রটি তুলে ধরে, তা যে তাদের অর্থনৈতিক ক্রিয়াকলাপের বাস্তবতা থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন, তা সম্ভব হয়েছে, আজকের ভারতে যে মহিলারা ঋণের বাহক ও গৃহস্থালি সংক্রান্ত অর্থনীতির পরিচালক হয়ে উঠেছে্‌ তাঁদের তুমুল সহৃদয়তা ও কর্মতৎপরতার জন্য। যখন, তাঁর বিলম্বিত হিস্টেরেকটমির জন্য বিজয়ার টাকার দরকার হয়, তিনি তাঁর বন্ধু “সকলের সহায়” শান্থির সাহায্যে এমএফআই থেকে ঋণ পেয়ে খুবই কৃতজ্ঞ ছিলেন। ইতিমধ্যেই যে স্থানীয় মহাজনের কাছ থেকে বিজয়া অনেক ঋণ নিয়ে ফেলেছেন, তাঁর থেকে অনেক কম সুদে এমএফআই তাঁকে ঋণ দেয়। কিন্তু বিজয়ার আদতে যা দরকার ছিল, তা হল প্রাথমিক ও নির্ভরযোগ্য চিকিৎসা পরিষেবা। এমএফআই-এর নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিদের সঙ্গে আমার যতবার কথা হয়েছে, তার মধ্যে একবারও মনে হয় নি যে, উন্নতি ও প্রতিষ্ঠালাভের জন্য যে সামাজিক সহায়তা মহিলা ঋণগ্রহীতাদের দরকার, তা তাঁরা আদৌ পাচ্ছেন কিনা সে বিষয়ে তাঁদের বিন্দুমাত্র আগ্রহ আছে

একটি ন্যায়পূর্ণ পথ ধরে সম্মুখে এগিয়ে চলার জন্য এই শিল্পের প্রয়োজন এমন সব অর্থবহ নিয়মকানুনের, যার সাহায্যে ভারতের শ্রমজীবী নারীদের ন্যায্যতর ভবিষ্যতের জন্য পরিকাঠামো গড়ে তুলতে মহিলা মক্কেল ও তাঁদের স্থানীয় সহায়করা আলোচনায় অংশগ্রহণ করতে পারবেন। দরিদ্র, শ্রমজীবী ও গ্রামীণ মহিলা, যাঁরা ঐতিহাসিকভাবে ভারতের ব্যাঙ্কিং শিল্প থেকে বাদ পড়ে গেছেন, তাঁদের সঙ্গে একটি বিশ্বস্ত সম্পর্ক গড়ে তুলে এমএফআই আসলে একটি ঐতিহাসিক পদক্ষেপ নিয়েছে। এত দিন যে নিয়মকানুন এবং প্রণোদনা তারা মেনে চলেছে, এবার সেগুলিকে পুনর্মূল্যায়ন করার, আভ্যন্তরীণ কর্মীমণ্ডলীর মধ্যে বৈচিত্র আনার ও সারা দেশের ঋণগ্রহীতাদের লড়াইয়ের তীব্রতা লাঘব করার পন্থা খুঁজে বের করার জন্য আলোচনা প্রক্রিয়ায় অংশ নেওয়ার সময় এসেছে ।     

স্মিথা রাধাকৃষ্ণান

Author

স্মিথা রাধাকৃষ্ণান ওয়েলেসলি কলেজের উইমেন স্টাডিজের লুলা লামের অধ্যাপক এবং সোশিয়লজির অধ্যাপক। 

(Bangla Translation by Sritama Halder)
অনুবাদঃ শ্রীতমা হালদার