ভারতে ভুয়ো খবর সংকটঃ এই ঘটনায় বিজেপির হোয়াটস্‌অ্যাপ গ্রুপ ঠিক কি ভূমিকা নিয়েছে?

19/07/2021
IiT English Page

কোভিড-19 অতিমারীর শুরু থেকেই ভারতীয় সোশ্যাল মিডিয়া ছেয়ে গেছে ভুল ও মিথ্যা খবরে। পারস্পরিক সামাজিক সম্পর্কের পরিস্থিতি ইতিমধ্যেই যথেষ্ট উদ্বেগজনক ছিল এবং তার উপর ভর করেই এই ঘটনা সম্ভব হয়েছে। ইচ্ছাকৃতভাবে সংক্রমণের জীবাণু ছড়ান হচ্ছে বা সংখ্যালঘু সম্প্রদায়গুলি রোগের বীজ ছড়িয়ে পড়া ত্বরান্বিত করার ষড়যন্ত্র করছে জাতীয় দাবী দৈনিক ঘটনায় পরিণত হয়েছে। রোগ সারানোর নানা অলৌকিক উপায় সংক্রান্ত সুপারিশে অনলাইন জগৎ ভরে ওঠার পাশাপাশি খবরের সত্যতা যাচাইকারীরা রোগ প্রতিকারের অসংখ্য মিথ্যা উপায় ধরে ফেলে সেগুলিকে জনগণের সামনে এনেছেন। 

অন্যান্য দেশ যে ধরনের ভুল তথ্য সংক্রান্ত সংকটের মুখোমুখি হয়েছে ভারতে তার রূপ ভিন্ন। প্রাসঙ্গিক বিষয়গুলি বিচার করলে বোঝা যাব যে, তার কারণ একদিকে ভারতের স্বাক্ষরতার হার অন্যান্য অনেক দেশের তুলনায় অনেক কম এবং অন্যদিকে ডিজিটাল জ্ঞানের ক্ষেত্রেও অনেক পিছিয়ে আছে এই দেশ। কিন্তু, এও সম্ভব যে, প্রযুক্তিগত কারণের পাশাপাশি দলমতগত রাজনৈতিক পার্থক্যও কারণ হিসাবে এর পিছনে থাকতে পারে। কোভিড-19 বিষয়ে ভুল খবর সহ অনেক তথ্যই শাসকদল বিজেপির দ্বারা সংগঠিত বিভিন্ন হোয়াটস্অ্যাপ গ্রুপের মাধ্যমে ছড়ান হয়েছে। স্পষ্টতই, ডিজিটাল পৃথিবীতে সক্রিয় থাকার জন্য প্রয়োজনীয় সাংগঠনিক ক্ষমতা বিজেপির অনেক প্রবল।

খবর ছড়ানোর এই বিশেষ উপায়টি থেকেই আরো অনেকগুলি প্রশ্ন উঠে আসে। প্রথমত, যে ভুল তথ্যগুলি ভারতের হোয়াটস্অ্যাপের মাধ্যমে ছড়ায় তার বেশির ভাগই কি এই ধরনের নির্দিষ্ট দলীয় সূত্র বা থ্রেড থেকে বেরিয়ে আসছে? দ্বিতীয়ত, দলীয় থ্রেড থেকে যে বিষয়গুলি উঠে আসছে, তর্কের খাতিরে, তার ঠিক কতটা অংশকে মিথ্যে খবর বলে ধরা হবে?       

এই প্রশ্নগুলি থেকে আরো কার্যকর ও সম্ভবত, আরো অর্থবহ একটি প্রশ্ন জিজ্ঞাসার রাস্তা খুলে দেয়ঃ এই ধরনের থ্রেড থেকে পাওয়া ভুল খবরের মুখোমুখি হওয়ার রাজনৈতিক প্রভাব কি হতে পারে? এর আগে দেখা গেছে যে, হোয়াটস্‌অ্যাপ থেকে ছড়িয়ে পড়া মিথ্যে রাজনৈতিক খবরের সঙ্গে দলবদ্ধ হিংসা এবং নির্বাচনের ফলাফল ঘুরে যাওয়ার যোগাযোগ আছে। কোভিড-19 সংক্রান্ত ভুয়ো খবরের প্রভাব অফলাইন জীবনেও পড়তে পারে। কোন সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে ইচ্ছাকৃতভাবে রোগের জীবাণু ছড়ানোর অভিযোগের গুজব দলবদ্ধ হিংসার সূত্রপাত করতে পারে। অলৌকিক উপায়ে রোগ সারানোর দাবির প্ররোচনায় মানুষ বৈধ ও বিজ্ঞানসম্মত নির্দেশাবলী উপেক্ষা করতে পারেন।    

পর্যাপ্ত তথ্যের অভাবে সমাজবিজ্ঞানীরা এই প্রশ্নগুলির কোনরকম সুসম্বদ্ধ ও প্রামাণ্য উত্তর দিতে পারেন না। সুতরাং, এই হোয়াটস্‌অ্যাপ গ্রুপগুলির প্রভাব কি হতে পারে তা নিয়ে শুধুমাত্র অনুমাননির্ভর এই অতিরঞ্জিত বিতর্কগুলি থেকে প্রকৃত সত্য বেছে নেওয়ার জন্য তাত্ত্বিকভাবে অনেকগুলি সিদ্ধান্ত নেওয়া যেতে পারে।    

প্রথমত, ভারতে সামগ্রিকভাবে ভুয়ো খবর (বিশেষত, কোভিড সংক্রান্ত ভুল তথ্য) তৈরি ও প্রচারের ক্ষেত্রে বিজেপি গ্রুপগুলির আপেক্ষিক তাৎপর্য কি? এই প্রশ্নের উপযুক্ত উত্তরের জন্য প্রয়োজন ভারতীয়রা তাদের ফোনের মাধ্যমে যে বিভিন্ন ধরনের গ্রুপের (দলীয় এবং দলের বাইরে) সঙ্গে পরিচিত হয় সে সম্বন্ধে বিস্তৃত বিশ্লেষণের। যদিও এই গ্রুপগুলি গোপনীয়তা বজায় রেখে চলতে পছন্দ করে বলে এই ধরনের বিশ্লেষণ করা কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। এগুলি সম্বন্ধে যে কটি তথ্য ইতিমধ্যে পাওয়া গেছে তার সাহায্যে কিছু ওয়াকিবহাল অনুমান করা যেতে পারে। দলীয় থ্রেডগুলি কিছু সংখ্যক মিথ্যা খবর অবশ্যই ছড়ায় এবং এগুলি নিশ্চিতভাবে সত্যিকারের বিপদের উৎস। তবে,হোয়াটস্‌অ্যাপের মাধ্যমে ভারতীয়রা অনবরত যে ভুয়ো খবরের মুখোমুখি হচ্ছেন তার অধিকাংশই এই বিজেপি গ্রুপগুলি থেকে সরাসরি বেরোচ্ছে বা এমনকি, অন্য সূত্রের মিথ্যা তথ্যও এই গ্রুপগুলির মাধ্যমেই ছড়াচ্ছে তা প্রায় অসম্ভব। আমরা প্রায় সকলেই পারিবারিক গ্রুপের মত অন্যান্য মাধ্যমের মারফত প্রতিনিয়ত প্রচুর ভুয়ো খবরের সম্মুখীন হই। এই খবরগুলির কিছু অংশ বিজেপির বিশ্বাসের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হলেও, অনেক ক্ষেত্রেই তা একেবারেই নয়। আর ভুয়ো খবর বিশ্বাস করতে ও ছড়িয়ে দিতে জনগণের কোন রাজনৈতিক দলের হস্তক্ষেপের দরকার হয় না। অন্যান্য যেকোন জায়গার মতই এ কথা ভারতের ক্ষেত্রেও সত্য। যেমন ধরা যাক, ধর্মীয় উন্মাদনার সঙ্গে ভুয়ো খবরে বিশ্বাস করার প্রবণতার গভীর সম্পর্ক আছে। উদাহরণ হিসাবে বলা যায়, কোভিড-19 সংক্রান্ত ভুয়ো খবরের ক্ষেত্রে, সুমিত্রা বদ্রীনাথন এবং আমি, আমাদের বর্তমান গবেষণার কাজ সময় দেখেছি, যে ভুয়ো খবরে বিশ্বাসের আন্দাজ পেতে বিজেপির আদর্শ সমর্থনের মাত্রার চেয়ের ধর্মীয় উন্মাদনার স্তর বোঝার চেষ্টা করা অনেক বেশি কার্যকারী। এই দিক থেকে দেখলে স্পষ্ট হয় যে, বিজেপির পক্ষ থেকে কোভিড-19 নিয়ে যে নানা মিথ্যা তথ্য প্রচারে উৎসাহ দেওয়া হলেও, এই প্রচারের দায়িত্ব একা বিজেপির দলীয় সূত্রের উপর চাপিয়ে দিলে ভুল হবে।       

এই থ্রেডগুলিতে ঠিক কতটা পরিমাণে ভুল তথ্য থাকে? এই থ্রেডগুলি নিয়ে যে অতিরঞ্জন করা হয়, আমার নিজের প্রত্যাশা ঠিক তার বিপরীতে চলে। সরলভাবে বলতে হলে, বিজেপির হোয়াটস্‌অ্যাপ বার্তার থ্রেড “ভরে” আছে এই ধরনের বিষয়ে তা ভাবা সম্ভবত ভুল। কার্যত, আনুপাতিক দিক থেকে হিসাব করলে, বিজেপির থ্রেড অপেক্ষাকৃত কম সংখ্যক ভুয়ো খবরের পোস্ট দেখা যায় (খুব বেশি হলে সামগ্রিক কনটেন্টের সামান্য শতাংশ) । এর কারণ খুবই সাধারণ। এই থ্রেডগুলিতে অপরিমিত সংখ্যায় অন্যান্য বিষয়ের পোস্টও দেখা যায় – অসংখ্য সমস্যা ও ইতিমধ্যে অনুগত সমর্থক ও সদস্যদের উৎসাহদানের উদ্দেশ্যে আরো বিভিন্ন ধরনের দলীয় ভাবনার “বৈধ” প্রচার (দলের কর্মীদের সেলফি এবং রাজনৈতিক কর্মীদের জন্মদিনে শুভকামনা জানান) । এই সমস্ত দলগত বিষয় আবার, পালাক্রমে, অরাজনৈতিক বিষয়ের মোড়কে ঢাকা থাকে যার অনেকটাই ধর্মীয় আইকনোগ্রাফির উপর ভর করে জানান অভিবাদন ও শুভকামনা। কিন্তু এই বিষয়গুলির মধ্যে অনেকটাই দলীয় বা ধর্মীয় নয়। এগুলিকে বরং নিছক সময় কাটানর উপায় বা বিনোদন বলে দেখা যেতে পারে। বিজেপির হোয়াটস্অ্যাপ গ্রুপে রসিকতা, গান, স্থানীয় সংবাদ, এমনকি বিজ্ঞাপন পর্যন্ত দেখা যায়। তবে, এতে আশ্চর্য হওয়ার কিছু নেই। হোয়াটস্‌অ্যাপের তুলনামূলকভাবে অনুভূমিক গঠনের জন্য “অ্যাডমিনদের” হাতে খুব বেশি ক্ষমতা থাকে না আর তারা চেষ্টা করলেও খুব সহজে কোন নির্দিষ্ট বিষয়ের বার্তা আটকাতে পারেন না। তাই, এই থ্রেডগুলিতে কোন ভুয়ো খবর পোস্ট হলে তা এসে হাজির হয় এই বিশাল সংখ্যক অন্য প্রসঙ্গের বিষয়ের মধ্যেই। কিন্তু এই প্রসঙ্গগুলি ক্লান্তিকর হলেও, কোনভাবেই ভুয়ো তথ্য নয়।    

এর আগে যে কার্যকারী প্রশ্নটি রাখা হয়েছিল তার কিছুটা পাওয়া যায় এই গ্রুপগুলির থেকে প্রচারিত বিষয়ের অগোছালো প্রকৃতি থেকেই – মানুষের উপর ভুয়ো তথ্যের ঠিক কি প্রভাব পড়ে? যেমন, এর থেকে আমাদের মনে হওয়া উচিত যে, বিজেপি থ্রেড এবং সাধারণভাবে, হোয়াটস্‌অ্যাপ গোষ্ঠীর মাধ্যমে, যে ভুল খবর প্রচারিত হয় সেগুলির যে বিপজ্জনক হওয়ার সম্ভাবনা থাকে তার কারণ ব্যবহারকারীর উপর ভুয়ো খবরের বর্ষণ হয় বলে নয়। বরং সঠিকভাবে বলতে গেলে, এগুলি ক্ষতিকর কারণ, আপাতদৃষ্টিতে নির্দোষ বিষয়ের মধ্যেই এই খবরগুলি লুকিয়ে থাকে। যদি এই “অন্য” কনটেন্টের সাহায্যে ব্যবহারকারীদের মধ্যে এক ধরনের গোষ্ঠীবোধ ও বিশ্বাসের বিকাশ হয় তাহলে এই ভুয়ো তথ্যের প্রভাব তীব্রতর হয়ে উঠতে পারে। অন্যভাবে বলতে গেলে, বদ্ধ ও নিরাপদ পরিসরে আলোচনা চালাতে পারে এমন গোষ্ঠীর প্রভাব ও ক্ষমতা নামমাত্র খরচে বিশাল সংখ্যক ভুয়ো খবর ছড়ানর সামর্থ্যের উপর কমই নির্ভর করে। বরং তারা লক্ষ্য ধৈর্য ধরে একটু একটু করে তৈরি - এবং বিশ্বস্ত - ডিজিটাল যৌথের সামনে বাছাই করা ভুয়ো খবরের সম্ভার তুলে ধরা।   

এই সব মিলিয়ে বোঝা যায় যে, ব্যক্তির আচরণের উপর যদি মিথ্যা খবরের প্রভাব পড়লেও, তার কারণ ওই ভুয়ো খবরের পুনরাবৃত্তি হতে হতে সাধারণ জ্ঞানে পরিণত হয়েছে বলে নয়। এই ধরনের খবর বিরল এবং বিশ্বাসযোগ্য ঘটনার প্রেক্ষিতে সেগুলিকে উপস্থিত করা হয় বলেই এগুলির প্রভাব এত তীব্র। এই দ্বিতীয় কারণটিই বরং অনেক বেশি প্রত্যয়যোগ্য। তবে, আমাদের কি আশা করা উচিত যে ভুয়ো খবরকে সব সময়ই এমনভাবে উপস্থিত করা হবে যাতে এই খবরের লক্ষ্য ব্যক্তির আচারব্যবহার বদলে যাবে? হোয়াটস্‌অ্যাপে খোশগল্প করার সময় কোন রোগ নিরাময়ের অলৌকিক উপায়ের কথা পড়ে কতজন বাস্তবে তার সাহায্য নেবেন এবং/অথবা অন্য সমস্ত স্বাস্থ্যরক্ষার প্রক্রিয়া ত্যাগ করবেন? 

আলোচনার এই পর্যায়ে এসে পাঠকদের মনে করিয়ে দেওয়া দরকার যে, এই সম্ভাব্য দুঃখজনক সম্পর্ককে প্রতিষ্ঠা করার মত কোন বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ আমাদের হাতে এই মুহূর্তে নেই। সেই প্রমাণ সংগ্রহ করা পর্যন্ত এই প্রশ্নটি আলোচনার জন্য খোলা থাকবে যার উত্তর পেতে আরো গবেষণার প্রয়োজন। কেউ স্বাস্থ্যবিষয়ক ভুয়ো খবরের মুখোমুখি হলে আমরা যদি বা বিজ্ঞানসম্মতভাবে তার প্রভাবের পরিমাপ করতে পারি, তাহলেও সেই প্রভাবকে কী ভাবে সনাক্ত করা হবে তা পরিষ্কার নয়। সাধারণভাবে দেখলে, আমাদের যা বোঝান হচ্ছে, হোয়াটস্‌অ্যাপের প্রভাব তার চেয়ে হয়ত অনেকটাই কম। প্রকৃতপক্ষে, সর্বশক্তিমান বিজেপি গোষ্ঠীর মানুষের মানসিকতা বদলে দেওয়ার কাহিনী আসলে শাসকদলটির নিজস্ব উদ্দেশ্যকেই সিদ্ধ করে। অমিত শাহের নেতৃত্বে দলের অন্যান্য নেতারা বারংবার তাঁদের তৈরি এই “ডিজিটাল সেনা” বা “হোয়াটস্‌অ্যাপ যন্ত্র” নিয়ে সদম্ভ ঘোষণা করেছেন। বিরোধী দলকে নিরুৎসাহ করার জন্য ক্ষমতাসীন শাসকদল এই রাস্তা নিয়েছেন – এই প্রেক্ষিতেও এই ঘোষণাকে পাঠ করা যায়।  

এই সম্প্রচার ব্যবস্থা বাড়তে বাড়তে এখন বিরোধী দলগুলির নিজস্ব সম্প্রচার ব্যবস্থাকে চাপা দিয়ে দিয়েছে। কিন্তু কিছু বিজেপি কর্মকর্তা যেভাবে এই ব্যবস্থাকেই এক অমোঘ অস্ত্র হিসাবে আমাদের সামনে তুলে ধরছেন তা হয়ত ঠিক নয়। সহজ ভাষায় বলতে গেলে, রাজনৈতিক মনস্তত্ত্ব নিয়ে গত সত্তর বছরের গবেষণা, রাজনৈতিক বার্তা এবং বিজ্ঞাপন আমাদের বলে আসছে – কাউকে নির্দিষ্ট মতে বিশ্বাস করান কোন স্বয়ংক্রিয় প্রক্রিয়া নয় – বিজেপির এই পদ্ধতি তার সম্পূর্ণ বিপরীতে অবস্থান করে। এবং জানিয়ে রাখা ভালো যে, গত কয়েক বছরে ইউএস-এর প্রেক্ষিতে একই বিষয় নিয়ে গবেষণা ধারাবাহিকভাবে এই সিদ্ধান্তে এসেছে যে, অনলাইন জগতে ছড়িয়ে দেওয়া ভুয়ো তথ্যের প্রভাব অধিকাংশ সময়েই অতিরঞ্জিতভাবে দেখান হয়েছে। তার কারণ অংশত, এই ধরনের সোশ্যাল মিডিয়া কনটেন্ট যাদের মনে দাগ কেটেছে তাঁরা ইতিমধ্যেই এই জাতীয় বিষয়ে বিশ্বাস করতেন এবং অংশত, যা আশা করা হয়েছিল তার থেকে কম সংখ্যক মানুষই এই ধরনের কনটেন্ট নিয়ে গভীরে ভাবনাচিন্তা করেছেন। 

ধরেই নেওয়া যায় যে একই ধরনের পরিস্থিতি ভারত এবং কোভিড-19 বিষয়ক ভুয়ো তথ্যের ক্ষেত্রেও দেখতে পাওয়া যায়। বিভিন্ন কারণে, সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে এই কনটেন্টগুলির খুব ছোট একটি গোষ্ঠীর বিশ্বাস ও আচরণ বদলানর ক্ষমতা আছে। অধিকাংশ মানুষই এই ধরনের মিথ্যা খবর নিয়ে খুব বেশি ভাবেন না বা গুরুত্ব দেন না। এই মিথ্যাগুলি আদতে অন্যান্য অসংখ্য তথ্য ও খবরের আড়ালে হারিয়ে যায়; বা যারা এই মিথ্যাতে বিশ্বাস করবেন তাঁরা অন্যান্য মাধ্যম থেকে ইতিমধ্যেই খবরগুলি পেয়ে গেছেন, যা আসলে অনেক বেশি সমস্যাজনক। সেদিক থেকে দেখলে, কোভিড-19 সংক্রান্ত ভুয়ো তথ্যের আদানপ্রদানের ক্ষেত্রে বিজেপির হোয়াটস্‌অ্যাপ গ্রুপগুলি অদ্ভুত ভূমিকাই ভারতের আসল সমস্যা নয়। এই দলের নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিরা বছরের পর বছর, হোয়াটস্‌অ্যাপ এবং অন্যান্য মাধ্যমে, উচ্চৈস্বঃরে বিজ্ঞানবিষয়ক ভুল তথ্য প্রচার করে চলেছেন। সেটাই এই দেশের আসল এবং আরো বেশি গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা।   

সিমন চাউচার্ড

Author

সিমন চাউচার্ড লেইডেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের সহকারী অধ্যাপক। 

(Bangla Translation by Sritama Halder)
অনুবাদঃ শ্রীতমা হালদার